শেরপুর জেলার সীমান্তবর্তী ঝিনাইগাতী উপজেলার হলদীগ্রামে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে ১৯৮০ সালে জন্মগ্রহণ করেন ।
তার বাবা মা আদর করে ছেলের নাম রাখেন উজ্জ্বল ( জাহাঙ্গীর আলম) ।
বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা মো: এলাহী বক্স ফাকরাবাদ ক্যাম্পের বাজারে ছোট একটি মুদির দোকান করতেন পাশাপাশি বিভিন্ন বিদ্যালয়ে খন্ডকালিন শিক্ষক হিসেবে ক্লাস নিতেন । মাতা জয়নব বেগমের ৬ সন্তানের মধ্যে জাহাঙ্গীর আলম ছিলেন ২য় সন্তান।
তাঁর ছোট দুই ভাই আলমগীর জাহান বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে এবং তিতুমীর জাহান পুলিশের ডিবিতে কর্মরত আছেন ।
ছোট থেকেই জাহাঙ্গীর আলম অত্যান্ত মেধাবী ছাত্র ছিলেন। তিনি ১৯৯১ সালে ফাকরাবাদ প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে ৫ম শ্রেণিতে সমগ্র স্কুলে সর্বোচ্চ নাম্বার পেয়ে প্রথম স্থান অর্জন করেন ।
১৯৯৪ সালে ফাকরাবাদ একতা নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে ৮ম শ্রেণিতেও স্কুলে সর্বোচ্চ নাম্বার পেয়ে প্রথম স্থান অর্জন করে পুরস্কৃত হন ।
তারপর ১৯৯৬ সালে ঝিনাইগাতী পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগে মাধ্যমিক পরীক্ষায় প্রথম বিভাগে লেটারস মার্কস নিয়ে কৃতিত্বের সাথে
উত্তীর্ণ হন এবং ১৯৯৮ সালে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় ঝিনাইগাতী আলহাজ্জ শফি উদ্দিন আহম্মদ কলেজ থেকে লেটার মার্কস নিয়ে প্রথম বিভাগে কৃত্বিতের সাথে উত্তীর্ণ হন ।
অভাব অনটনের সংসারে উচ্চ শিক্ষার জন্য কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগই হয়নি।
তাই উচ্চ শিক্ষার জন্য মামার সহযোগিতায় ১৯৯৯ সালে ময়মনসিংহ আনন্দ মোহন কলেজে প্রাণিবিদ্যা বিভাগে ভর্তি হন। পড়াশোনা অবস্থায় টিউশনি করে তার নিজের খরচ এবং ছোট ভাইবোনদের পড়াশোনা করাতেন।
২০০২ সালে বিএসসি (সম্মান)
এবং ২০০৩ সালে এমএসসি স্নাতকোত্তর (ফিসারিজ) সম্পূর্ণ করেন ।
জাহাঙ্গীর আলম মাস্টার্স ব্যবহারিক পরীক্ষা শেষ করেই এসিআই ফামার্সিউটিক্যাল কোম্পানিতে মেডিক্যাল রিপ্রেজেন্টেটিভ হিসেবে যোগদান করেন।
৮ আগস্ট ২০০৮ সালে শ্রীবরদী গোপালখিলা উচ্চ বিদ্যালরে অবসর প্রাপ্ত স্বনামধন্য শিক্ষক মো: মোফাজ্জর হক বিএসসি এর কনিষ্ঠ কন্যার সাথে বৈবাহিক বন্ধনে আবদ্ধ হন ।
তারপর ২০০৯ সালে পশ্চিম বনগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে যোগদার করেন । ২০১০ সালে বদলী হয়ে হলদীগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কর্মরত ছিলেন ।
২০১০ সালে জামালপুর পিটিআই থেকে সি-ইনএড দীর্ঘমেয়াদী প্রশিক্ষণ কোর্স সফলতার সাথে সম্পন্ন
করেন । ২০১২ সালে নীলফামারী সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ে জীববিজ্ঞানের সহকারী শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন ।
অত:পর ২০১৩ সালে বাংলাদেশে পাবলিক সার্ভিস কমিশনের অধীনে ৩২তম বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারে সুপারিশ প্রাপ্ত হন এবং সাপাহার সরকারি ডিগ্রী কলেজে প্রভাষক হিসেবে প্রাণিবিদ্যা বিভাগে যোগদান করেন ।
তারপর ২০১৪ সালে বদলী জনিত কারনে জামালপুর জাহেদা-শফির মহিলা কলেজ , ২০১৫ সালে শেরপুর সরকারি মহিলা কলেজ এবং ২০২২ সালে পদোন্নতি প্রাপ্ত হয়ে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে শেরপুর সরকারি কলেজের প্রাণিবিদ্যা বিভাগে যোগদান করেন ।
বর্তমানে জাহাঙ্গীর আলম শেরপুর সরকারি কলেজে প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হিসেবে অত্যান্ত দক্ষতার সাথে কাজ করে যাচ্ছেন।
স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, জাহাঙ্গীর আলম বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন এর সাথে কাজ করেন।