১৯৭১ সালের ৯ ডিসেম্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে পরাজিত করে শেরপুরের নকলা উপজেলা হানাদারমুক্ত হয়। এদিন মুক্তিযোদ্ধাগণ সশস্ত্র লড়াইয়ের মাধ্যমে সীমান্তবর্তী এই উপজেলা বিনা যুদ্ধে হানাদার মুক্ত করেন।
যুদ্ধে ১১নং সেক্টর নকলা অঞ্চল থেকে পাকবাহিনীকে বিতাড়িত করে বিজয়ের স্বাধীন বাংলার পতাকা উত্তোলন করেন। জানা যায়, মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ব্রহ্মপুত্র নদীর উত্তরে আহম্মদ আলী উচ্চ বিদ্যালয়ে স্থাপিত পাক হানাদার বাহিনীর হেডকোয়ার্টারের দায়িত্বে ছিলেন মেজর রিয়াজ। হানাদাররা নকলায় অগ্নিসংযোগ করে হাজারো মানুষকে গৃহহীন করে এবং শত শত মুক্তিকামী যুবককে হত্যা করে। ১৯ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা এই যুদ্ধে শহীদ হন।
কোম্পানি কমান্ডার আব্দুল হক চৌধুরীর নেতৃত্বে টু-আইসি আব্দুর রশিদ, সিকিউরিটি কর্মকর্তা একলিম শাহসহ তিন শতাধিক মুক্তিযোদ্ধা যুদ্ধে অংশ নেন।পাকবাহিনী পিছু হটে, মুক্তিযোদ্ধারা ১৩০ জন স্থানীয় দোসরকে আটক করেন। পরদিন ১১০টি অস্ত্রসহ ১১৭ জন রাজাকার ও আল-বদর সদস্য কোম্পানি কমান্ডারের কাছে আত্মসমর্পণ করে।
সকাল ৯ ডিসেম্বর নকলা পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করা হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন, লেফটেন্যান্ট কর্নেল আবু তাহের, কোম্পানি কমান্ডার আব্দুল হক চৌধুরী ও গিয়াস উদ্দিন, ইপিআর ওয়্যারলেস অপারেটর ফরহাদ হোসেন, নকলা–নালিতাবাড়ী–শেরপুরের প্লাটুন কমান্ডাররা, কোয়ার্টার মাস্টার জুলহাস উদ্দিন ফকির, গোয়েন্দা বিভাগের মুক্তিযোদ্ধা আবুল হাশেমসহ হাজারো মুক্তিকামী মানুষ। এভাবেই নকলা রক্তপাত ছাড়াই সম্পূর্ণভাবে মুক্ত হয়।
২০২৩ সাল পর্যন্ত প্রতি বছর উপজেলা প্রশাসন, স্থানীয় রাজনৈতিক দল ও বিভিন্ন সংগঠনের উদ্যোগে প্রস্তুতিমূলক সভা ও নানা কর্মসূচির মাধ্যমে দিনটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হতো।