লিচু সংগ্রহে ব্যস্ত সময় পার করছেন মেহেরপুরের চাষীরা।
মাহাবুব ইসলাম, মেহেরপুর
মেহেরপুরের লিচুর কদর হিমসাগর আমের মতোই। লিচু ক্ষণকালীন ফল। জেলায় ৩০০ হেক্টর জমিতে লিচুর চাষ হচ্ছে। গত তিন বছরে ৩শ বিঘা জমিতে লিচুর চারা রোপণ করা হয়েছে। আগামী বছর থেকে নতুন ৩শ বিঘায় চাষ হওয়া গাছেও লিচু ধরবে। এ জেলায় বোম্বাই, মোজাফফর, চায়না-থ্রিসহ বিভিন্ন জাতের লিচু উৎপাদন হয়ে থাকে। তবে প্রখ্যাত লিচুর মধ্যে আতা বোম্বাই সর্বশেষ্ঠ। কারণ মাংসল, রসালো, সুমিষ্ট ও ছোট বিচির টকটকে লাল এ লিচু বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠ লিচুর অন্যতম। ইতোমধ্যেই বাজারে উঠতে শুরু করেছে বিভিন্ন জাতের লিচু, চলছে চাষীদের লিচু সংগ্রহের ব্যস্ততা। মেহেরপুরের বিভিন্ন লিচুবাগান ঘুরে দেখা গেছে লিচুরভারে ডাল নুইয়ে পড়েছে। গাংনী উপজেলার আজান গ্রামের বিশিষ্ট লিচু বাগান ক্রেতা নাজমুল ইসলাম জানান-এবার ৮-১০টা লিচুর বাগান কিনেছি, সব বাগানেই প্রচুর পরিমানে লিচু ধরেছে। তবে রোজার কারনে সব জাতের লিচু একই সময়ে ভাঙার উপযোগী হয়ে গেছে, এজন্য তাড়াহুড়ো করেই লিচু নামাতে হচ্ছে, যার ফলে বাজার মূল্য কিছুটা কম পাচ্ছি। মেহেরপুর সদর উপজেলার খোকসা গ্রামের লিচুচাষী শরিফুল ইসলাম জানান, আমার ৫ বিঘা লিচুর বাগান আছে, প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে অন্তত ৫ লাখ টাকার কেনা বেচা হবে। তিনি আরও জানান- এ একটি মাত্র ফল যার একমাস সময় ধরে যত্ন করতে হয়। লিচুর বড় শত্রু বাদুড় আর চামচিকা। লিচুতে রং ধরলেই একরাতেই চামচিকাতে লিচু কেটে নষ্ট করে দেবে। এজন্য সারা রাত জেগে বাদুড় চামচিকা প্রতিরোধ করতে হয়। অতিরিক্ত তাপদাহেও লিচু ফেটে নষ্ট হয়ে যায়।
মেহেরপুর সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নাসরিন পারভীন বলেন, উপজেলায় ৩’শ হেক্টর জমিতে লিচুর বাগান রয়েছে।
গাংনী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা লাভলী খাতুন বলেন, উপজেলায় ৭৫ হেক্টর জমিতে লিচু বাগান রয়েছে।
মুজিবনগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আনিসুজ্জামান খান বলেন, উপজেলায় ৩৫০ হেক্টর জমিতে লিচু বাগান রয়েছে। তবে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের তথ্যমতে, চলতি বছর মেহেরপুরে ৬শ ৩০ হেক্টর জমিতে লিচুর আবাদ হয়েছে। কর্মকর্তারা বলেন, ফলন ভালো হওয়ায় দিন দিন লিচু চাষ বাড়ছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে কৃষকরা তাদের কাঙ্ক্ষিত ফলন পাবেন বলে আশাবাদী।