1. admin@dainiksangbaderkagoj.com : admin :
  2. mahadihasanchamak@gmail.com : Azizul islam : Azizul islam
খোকা, মিয়াভাই থেকে মুজিব ভাই, এরপর বঙ্গবন্ধু - দৈনিক সংবাদের কাগজ
২৪শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ| ৯ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ| বর্ষাকাল| বুধবার| সন্ধ্যা ৬:০৩|

খোকা, মিয়াভাই থেকে মুজিব ভাই, এরপর বঙ্গবন্ধু

Reporter Name
  • Update Time : বৃহস্পতিবার, মার্চ ১০, ২০২২,
  • 56 Time View

 

বুজের ছায়াঘেরা গ্রাম টুঙ্গিপাড়া। গ্রাম বাংলার চিরায়ত বয়ে চলা নদী, হিজলের বন, পাখির কিচিরমিচির-নদীর কলকল ধ্বনি আর ভেজা বাতাস, সব মিলিয়ে শান্ত, স্নিগ্ধ নিরিবিলি পরিবেশ। সেখানেই শতবছর আগে এই দিনে জন্মেছিলেন বাঙালি জাতির মুক্তির পথপ্রদর্শক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। দিনটি ছিল বুধবার, তারিখ ১৭ মার্চ, সাল ১৯২০। টুঙ্গিপাড়ার বনেদি পরিবার, বাবা শেখ লুৎফর রহমান ও মা সায়েরা খাতুনের ঘরে জন্ম নেন ’বঙ্গবন্ধু’।

জন্মের পর নানা শেখ আবদুল মজিদ তার নাম রাখেন শেখ মুজিবুর রহমান। সেসময় তিনি বঙ্গবন্ধুর মাকে বলেন, ‘মা সায়েরা, তোর ছেলের এমন নাম রাখলাম যে নাম জগৎজোড়া খ্যাত হবে।’ পরবর্তীতে তার কথার প্রতিটি অক্ষর সত্য হয়েছে।

সেই মানুষটিই শোষিত, নিপীড়িত বাংলার মানুষকে মুক্তির পথ দেখিয়ে, দিয়েছেন স্বাধীনতার স্বাদ। বাবা-মায়ের খোকা, ভাইবোনদের মিয়াভাই রাজনৈতিক জীবনে বন্ধু, নেতা, কর্মীদের কাছে পরিচিতি পান মুজিব ভাই হিসেবে। সেই খোকা, মিয়া ভাই আর মুজিব ভাই একসময় হয়ে ওঠেন বাঙালি জাতির জনক, বঙ্গবন্ধু।

প্রথম বজ্রধ্বনি

ছেলেবেলা থেকেই শেখ মুজিবুর রহমানের বলিষ্ঠ নেতৃত্ব, ত্যাগ আর মানুষের প্রতি তীব্র ভালোবাসা তাকে বাংলার মানুষের বঙ্গবন্ধু করে তুলেছিল। পরিবারের সবাই যেমন বঙ্গবন্ধুকে ভালোবাসতেন, তেমনি স্কুলেও ছিলেন তিনি সমান জনপ্রিয়। বাবা-মা আদর করে ডাকতেন খোকা নামে। আর ভাইবোনদের আদরের মিয়াভাই ছিলেন তিনি। স্কুলছাত্র থাকা অবস্থায়ই দরিদ্র শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়ানোসহ নানা সমাজসেবা কাজে যুক্ত হন শেখ মুজিব। অধিকারের প্রশ্নে সবসময় সরব বঙ্গবন্ধু ছেলেবেলাতেও কোন সুযোগ হাতছাড়া করতেন না।

বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী বই থেকে জানা যায়, গোপালগঞ্জের মাথুরানাথ মিশনারি স্কুলে ১৯৩৯ সালের অষ্টম শ্রেণীতে পড়েন বঙ্গবন্ধু। অবিভক্ত বাংলার মুখ্যমন্ত্রী শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক একদিন সেই স্কুল পরিদর্শনে যান। সঙ্গে ছিলেন বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী। স্কুলের শিক্ষকদের ভড়কে দিয়ে হঠাৎ করে একদল ছাত্র এসে দাঁড়ালেন তাদের সামনে। মুখ্যমন্ত্রীর সামনে দাঁড়িয়ে মুজিব নির্ভয়ে স্কুলের ছাদ মেরামতের দাবি উত্থাপন করেন। বলেন, ‘আমরা এই স্কুলেরই ছাত্র। স্কুলের ছাদে ফাটল ধরেছে। সামান্য বৃষ্টি হলেই সেখান থেকে বৃষ্টির পানি চুইয়ে পড়ে আমাদের বই-খাতা ভিজে যায়। ক্লাস করতে অসুবিধা হয়।’

প্রথম বজ্রধ্বনিতেই সফল হয়েছিলেন কিশোর মুজিব। মুজিবের সৎসাহসে মুগ্ধ মুখ্যমন্ত্রী সেদিন স্কুলের ছাদ মেরামতের আশ্বাস দিয়েছিলেন।

ছোটবেলা থেকেই এমন সাহসী ও দৃঢ়প্রত্যয়ী ছিলেন বঙ্গবন্ধু। যুক্ত ছিলেন খেলাধুলা ও সমাজসেবামূলক নানা কাজে। যা বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী থেকে খুব সহজেই অনুমেয়। মুষ্ঠিভিক্ষার চালে গরীব ছেলেদের পড়াশুনা ও পরীক্ষার খরচ, নিজের পরা জামা গরীবদের দেওয়াসহ অধিকারবঞ্চিত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর মহৎ গুণ ছিল তার জন্মগত। আর তার প্রকাশও ছিল সেই শৈশব থেকেই।

মুজিব ভাই থেকে বঙ্গবন্ধু হয়ে ওঠা

ছোটবেলা থেকেই বঙ্গবন্ধু দেশের মানুষের কথা ভাবতেন। তাদের জন্য বাংলার এক প্রাপ্ত থেকে আরেক প্রাপ্ত ছুটেছেন। কখনো গরীব, দুঃখীদের কাছে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন, কখনো দিয়েছেন মুক্তির মন্ত্র। বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে বাঙালির সব স্বাধীকার আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছেন। এ জাতির যেকোন প্রয়োজনে কাণ্ডারীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন। এসব করতে গিয়ে তাকে বার বার কারাবরন করতে হয়েছে। তারপরও থেকে থাকেননি বঙ্গবন্ধু।

শেখ মুজিবুর রহমান গণপরিষদের সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর ১৯৫৫ সালে আওয়ামী লীগের উদ্যোগে ঢাকার পল্টনে জনসভা থেকে পূর্ব পাকিস্তানের স্বায়ত্বশাসন দাবি করে ২১ দফা ঘোষণা করা হয়। ২৫ আগস্ট করাচীতে বঙ্গবন্ধু পাকিস্তান গণপরিষদে বলেন, পূর্ব পাকিস্তান নয় পূর্ব বাংলা বা বাংলা নামে ডাকার কথা বলেন।

পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট মেজর জেনারেল ইস্কান্দার মির্জা ও সামরিক বাহিনী প্রধান জেনারেল আইয়ুব খান সামরিক শাসন জারি করে রাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন ১৯৫৮ সালের ৭ অক্টোবর। এর ৪ দিন পর ১১ অক্টোবর বঙ্গবন্ধুকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং একের পর এক মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করা হয়। প্রায় চৌদ্দ মাস জেলখানায় থাকার পর তাকে মুক্তি দেওয়া হলেও আবারো জলেগেট থেকেই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

সামরিক শাসন ও আইয়ুববিরোধী আন্দোলন গড়ে তোলার লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধু গোপন রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করেন। ছাত্রনেতাদের নিয়ে গঠন করেন ‘স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী পরিষদ’ নামে একটি গোপন সংগঠন। ১৯৬২ সালে বিরোধীদলীয় মোর্চা জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট গঠিত হলে এর পক্ষে জনমত গঠনের জন্য সারা বাংলা সফর করেন বঙ্গবন্ধু।

১৯৬৪ সালে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে গঠিত হয় সর্বদলীয় সংগ্রাম পরিষদ। তখন সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা প্রতিরোধে তার নেতৃত্বেই গঠিত হয় দাঙ্গা প্রতিরোধ কমিটি। এরপর আইয়ুববিরোধী ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের প্রস্তুতি গ্রহণের উদ্যোগ নিচ্ছিলেন বঙ্গবন্ধু। কিন্তু রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের ১৪ দিন আগে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

এরপর আসে ১৯৬৬। বাঙালির মুক্তির আন্দোলন আরো বেগবান হয় যখন ৬ ফেব্রুয়ারি লাহোরে বঙ্গবন্ধু বিরোধী দলসমূহের জাতীয় সম্মেলনের বিষয় নির্বাচনী কমিটিতে বাঙালি জাতির মুক্তির সনদ, ঐতিহাসিক ছয় দফা দাবি পেশ করেন। এরপর ৬ দফার পক্ষে জনমত সৃষ্টির লক্ষ্যে সারাদেশে শুরু করেন গণসংযোগ। এসময় দেশের বিভিন্ন জায়গায় তাকে বার বার গ্রেপ্তার করা হয়।

বঙ্গবন্ধুকে এক নম্বর আসামিসহ ৩৫ জন বাঙালি ও সিএসপি অফিসারের বিরুদ্ধে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা দেয়া হয় ১৯৬৮ সালের ৩ জানুয়ারি। মুক্তি পেয়ে আবারো কারাবন্দি হন বঙ্গবন্ধু। তবে এ মামলার আসামিদের মুক্তির দাবিতে উত্তাল হতে থাকে সারাদেশ।

জনগণের অব্যাহত চাপের মুখে ১৯৬৯ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা প্রত্যাহার করে বঙ্গবন্ধু ও অন্যান্য আসামিদের মুক্তি দিতে বাধ্য হয় কেন্দ্রীয় সরকার। পরদিনই রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) কেন্দ্রীয় ছাত্র মুক্তি পরিষদের উদ্যোগে বঙ্গবন্ধুকে সংবর্ধনা দেওয়ার আয়োজন করা হয়। প্রায় দশ লাখ ছাত্র জনতা

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category

Calendar

Calendar is loading...
Powered by Booking Calendar
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি অনুমতি ছাড়া, নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি, কপিরাইট 2022 ইং দৈনিক আলোকিত বশিশাল এর সকল স্বত্ব সংরক্ষিত।
ভুল তথ্যর জন্য সেই তথ্য দাতাই দায়ী থাকবে, কর্তৃপক্ষ কোন ভাবে দায়ী থাকবে না।
Theme Customize BY BD IT HOST