আততায়ীর গুলিতে শুক্রবার নিহত হয়েছেন জাপানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে।শান্তি প্রিয় দেশ জাপানের সাবেক প্রধানমন্ত্রীর এমন মৃত্যু নাড়া দিয়েছে পুরো বিশ্বকে।জাপানের রাজনৈতিক ইতিহাসে অন্যতম পরিচিত ও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি তিনি। তার রাজনৈতিক ইতিহাস সমৃদ্ধ।শিনজো আবে জাপানের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি সময় ক্ষমতায় থাকা প্রধানমন্ত্রী।তিনি জাপানের অর্থনীতিকে উঁচুস্থানে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে অবদান রেখেছেন।১৯৫৪ সালের ২১ সেপ্টেম্বর জাপানের রাজধানী টোকিওতে এক সম্রান্ত রাজনৈতিক পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন আবে। তার দাদা ও চাচাও জাপানের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তাছাড়া তার বাবা ছিলেন ডানপন্থী লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপির) সাবেক মহাসচিব।একজন রক্ষণশীল জাতীয়তাবাদী হিসাবে পরিচিত, ৬৭ বছরের শিনজো আবের নেতৃত্বে লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি (এলডিপি) দু-দুবার নির্বাচনে জেতে। প্রথম দফায় তিনি খুব অল্প সময় ক্ষমতায় ছিলেন- ২০০৬ সালের শুরু থেকে এক বছরের কিছুটা বেশি। তার ঐ শাসনকাল নিয়ে কেলেঙ্কারি আর বিতর্ক ছিল।কিন্তু ২০১২ সালে শিনজো আবের ক্ষমতায় ফেরা ছিল সত্যিই বিস্ময়কর। তারপর ২০২০ সালে স্বাস্থ্যগত কারণে পদত্যাগ করা পর্যন্ত টানা আট বছর তিনি জাপানের ক্ষমতায় ছিলেন।২০১১ সালের সুনামি ও ভূমিকম্পের ধ্বংসযজ্ঞে জাপানে প্রায় ২০ হাজার মানুষ মারা যায়। সে সময় ফুকুশিমা পারমাণবিক কেন্দ্রে দুর্ঘটনায় দেশটি বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। ধাক্কা গিয়ে পড়ে অর্থনীতিতে। কিছুদিন পর ক্ষমতায় এসে সেই সংকট সামলেছিলেন শিনজো আবে।নতুন করে জটিল পাকস্থলীর আলসারে আক্রান্ত হয়েছেন- বেশ কিছুদিন ধরে এমন সন্দেহ-কানাঘুষো চলার পর ২০২০ সালে পদত্যাগ করেন তিনি। একই রোগের কারণে ২০০৭ সালেও তিনি পদত্যাগ করেছিলেন। পদত্যাগের পর তার উত্তরসূরি হন ঘনিষ্ঠ রাজনৈতিক মিত্র ইয়োশিহিদে সুগা। ক্ষমতা ছেড়ে দিলেও, জাপানের রাজনীতিতে আবের প্রভাব-প্রতিপত্তি কখনই কমেনি।শিনজো আবের বাবা ছিলেন সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী শিনতারো আবে। তার নানা ছিলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী নবুসুকে কিশি। সুতরাং জাপানের একটি প্রভাবশালী রাজনৈতিক পরিবারে ছিল তার জন্ম ও বড় হওয়া।শুক্রবার (৮ জুলাই) জাপানের পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষের নির্বাচনে এক প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণার জন্য দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর নারায় যান আবে। সেখানে এক বক্তৃতা দেওয়ার সময় ৪১ বছর বয়সী একজন বন্দুকধারী তাকে গুলি করে। জানা গেছে, হত্যাকারী একজন সাবেক নৌ-সেনা।হাসপাতালে নেওয়ার সময়ও আবে সচেতন ছিলেন। কিন্তু পরে তিনি মারা যান।