:
বাংলাদেশ কনভেনশন নর্থ আমেরিকা আয়োজিত চতুর্থ বাংলাদেশ সম্মেলন গত ২ সেপ্টেম্বর শুক্রবার সন্ধ্যায় নিউইয়র্কের লাগোর্ডিয়া এয়ারপোর্ট ম্যারিয়ট হোটেলে অনুষ্ঠিত হয়। তিন দিনব্যাপী এই সম্মেলন উদ্বোধন করেন বাংলা সিডিপ্যাপ ও অ্যালেগরা হোম কেয়ারের প্রেসিডেন্ট ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু জাফর মাহমুদ। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য দেন একুশে পদকপ্রাপ্ত ও স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী রথীন্দ্রনাথ রায় ও শহীদ হাসান, সম্মেলনের আহ্বায়ক ডা. চৌধুরী সারোয়ারুল হাসান, জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি বদরুন নাহার খান মিতা, সম্মেলনের চেয়ারম্যান ও রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ী নুরুল আজিম ও সম্মেলনের সদস্য সচিব ও শোটাইম মিউজিকের কর্ণধার আলমগীর খান আলম।খবর বাপসনিউজ।
উদ্বোধনের পর ম্যারিয়ট হোটেলের বিশাল বলরুমের সুদৃশ্য মঞ্চে শুরু হয় উদ্বোধনী দিনের অনুষ্ঠান। বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে ম্যারিয়ট হোটেলের বিশাল বলরুমে শুরু হয় উদ্বোধনী দিনের অনুষ্ঠান । পরে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী রথীন্দ্রনাথ রায় ও শহীদ হাসান সঙ্গীত পরিবেশন করেন। এছাড়া মনিকা রায় চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন শিল্পকলা একাডেমি ও সবিতা দাসের নেতৃত্বে বহ্নিশিখার শিল্পীরা সঙ্গীত ও নৃত্য পরিবেশন করেন। সেলিম ইব্রাহিম, সাদিয়া খন্দকার ও কামরুজ্জামান বাবুর সঞ্চালনায় এদিন অন্যান্য অনুষ্ঠানমালার মধ্যে ছিল স্বাস্থ্যবিষয়ক সেমিনার এবং অতিথিদের বক্তব্য। স্বাস্থ্যবিষয়ক সেমিনারের সঞ্চালক ছিলেন সাংবাদিক শামীম আহমেদ। আলোচক ছিলেন লং আইল্যান্ড ইউনিভার্সিটির সহযোগী অধ্যাপক ড. ইব্রাহিম সিরাজ।
দ্বিতীয় দিনের অনুষ্ঠানমালার মধ্যে ছিল চলচ্চিত্র প্রদশর্নী, কাব্য জলসা, সঙ্গীত ও নৃত্য পরিবেশনা, ফ্যাশন শো, সেমিনার। এদিন সঙ্গীত পরিবেশন করেন বাংলাদেশের জনপ্রিয় শিল্পী সামিনা চৌধুরী, কালা মিয়া, চন্দন চৌধুরী, শামীম সিদ্দিকী, রায়ান তাজ, প্রমি তাজ, বীণা বর্মণ প্রমুখ। ফ্যাশন শো’ ও নৃত্য পরিবেশন করে মাজিদ ডিজায়ার। কাব্য জলসায় অংশ নেন নিউইয়র্কের কবি ও সাহিত্যিকেরা। তাদের মধ্যে ছিলেন ড. মহসীন আলী, এবিএম সালেহ উদ্দীন, রওশন হাসান, সোনিয়া কাদির, শাহীন ইবনে দিলওয়ার প্রমুখ।
তৃতীয় ও শেষ দিনে ছিল আকর্ষণীয় সব অনুষ্ঠান। এদিন বিশেষ পর্বে অংশ নেয় বাংলাদেশ ক্লাব ইউএসএ। সঙ্গীত পরিশেন করেন প্রখ্যাত নজরুল সঙ্গীত শিল্পী ফেরদৌস আরা, রিজিয়া পারভীন, শাহ মাহবুব, কৃষ্ণা তিথি, নীলিমা শশী, বাঁধন, লেমন চৌধুরী, ফারহানা তুলি প্রমুখ। শেষ দিনের বিশেষ আকর্ষণ ছিল সোস্যাল মিডিয়া স্টার প্রিসিলার উদ্দীপনামূলক বক্তব্য। এসময় তরুণ প্রজন্মের ভবিষ্যত করণীয় নিয়ে দিকনির্দেশনা দেন তিনি।
চতুর্থ বাংলাদেশ সম্মেলনে বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদানের জন্য চারজনকে সম্মাননা প্রদান করা হয়। তারা হলেন- সাহিত্যে সোনিয়া কাদির, সমাজসেবায় মুক্তিযোদ্ধা আবু জাফর মাহমুদ, শিক্ষায় ইঞ্জিনিয়ার আবুবকর হানিপ এবং তরুণ প্রজন্মের আইকন ফাতেমা প্রিসিলা। শেষ দিনে উদ্বোধনী বক্তব্য দেন সম্মেলনের আহ্বায়ক ও বিশিষ্ট চিকিৎসক চৌধুরী সারোয়ারুল হাসান। স্বাগত বক্তব্য দেন সদস্য সচিব আলমগীর খান আলম। এছাড়া প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন বাংলা সিডিপ্যাপ ও অ্যালেগরা হোম কেয়ারের প্রেসিডেন্ট বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু জাফর মাহমুদ। এসময় তিনি প্রবাসে বাংলাদেশি কৃষ্টি-সংস্কৃতি তুলে ধরার অনন্য প্রয়াসের জন্য আয়োজকদের ধন্যবাদ জানান।
তিন দিনব্যাপী সম্মেলনে আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ছাড়াও ছিল বিভিন্ন পণ্যের স্টল। বাংলাদেশের বিভিন্ন পণ্য শোভা পায় এসব স্টলে। অনুষ্ঠানস্থলে ছিল মুখরোচক খাবার, যেমন ছোলা বুট, সিঙ্গারা, সমুচা, নুডলস ও বিরিয়ানি। সবার জন্য উন্মুক্ত তিন দিনব্যাপী সম্মেলনে কোনো প্রবেশমূল্য ছিল না। সম্মেলনের সদস্য সচিব আলমগীর খান আলম জানান, আগামীতে আরো বড় পরিসরে বাংলাদেশ সম্মেলন হবে। এজন্য বাংলাদেশি কমিউনিটির সহযোগিতা চান তিনি। তিন দিনব্যাপী এই সম্মেলন প্রবাসীদের উপস্থিতিতে মিলনমেলায় পরিণত হয়।